রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফে বস্তাবন্দি শিশু হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ২ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কক্সবাজারে শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও অনুদান প্রদান করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ কুতুবদিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস পালিত টেকনাফে নিখোঁজ মেয়ে শিশুর বস্তিাবন্দি মরদেহ উদ্ধার ৩৫ হাজার ইয়াবা সহ পুলিশ কনস্টেবল সহ আটক ২ সেনা কর্মকর্তারা ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাপ্রাপ্ত : মব জাষ্টিস নিন্দনীয় ৪৮ মামলার আসামী জিয়াবুলের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান : অস্ত্র উদ্ধার টেকনাফে ৩১ দখলদারের থাবায় ১৪ বছরে নিশ্চিহ্ন ৩০০ বছরের পুরোনো বৌদ্ধ বিহার আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

রোহিঙ্গাদের সাথে দিনভর আলোচনা শেষে মিয়ানমার ফিরে গেলেন ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি, বুধবার আবারও আসবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দিনভর ১৮০ রোহিঙ্গা পরিবার প্রধানের সাথে আলোচনা শেষ করতে পারেননি মিয়ানমার থেকে আসা ৩২ সদস্যের প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধিদলটি মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার নাফ নদীর জালিয়াপাড়াস্থ জেটিঘাট দিয়ে ফের মিয়ানমার চলে গেছেন। বুধবার সকালে এই প্রতিনিধিদলটি আবারও টেকনাফে আসবেন এবং রোহিঙ্গাদের সাথে অসমাপ্ত আলোচনা চালিয়ে যাবেন।

মিয়ানমারের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের দিনব্যাপী আলোচনা শেষে মঙ্গলবার বিকালে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার বিষয়ক সেলের মহাপরিচালক মাইনুল কবির সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে সরকার কাজ করছে। সরকার সবসময় রোহিঙ্গা সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে নিজেদের জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে সেই বিষয়ের গুরুত্ব দিয়ে আসছে। প্রত্যাবাসন একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের একটা চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আওতায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরে যায়।

সংশ্লিষ্ট আগের সংবাদ : প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের সম্মতি আদায়ে টেকনাফে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল

তিনি বলেন, এর আগে চলতি বছর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল দুইবার রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ করতে এসেছিল। এসময় তারা ( মিয়ানমার প্রতিনিধি ) রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে ( মিয়ানমার ) যে ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আজকেও তারা সুনির্দিষ্ট করে বলেছে, কোন গ্রামে কে যাবে; কিভাবে যাবে। এই আলোচনাটা আমাদের সঙ্গে অব্যাহত আছে, অব্যাহত থাকবে। “

তবে রোহিঙ্গারা কখন স্বদেশে ফিরে যাবেন সেটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে বলে মন্তব্য করেন মাইনুল কবির বলেন, “ রোহিঙ্গারা শুধু এখান ( বাংলাদেশ ) যাওয়াটাই নয়, যাওয়ার পরও যেন তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে এবং প্রত্যাবাসনটাও যেন টেকসই ও স্থায়ী হয়; সে জন্য মিয়ানমারের সাথে আলোচনা করে প্রচেষ্টা চলছে।”

প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের সংশয় ও অবিশ্বাস দূর করতে মিয়ানমারের সাথে সবধরণের আলোচনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মহাপরিচালক।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় টেকনাফ পৌরসভার নাফ নদীর জালিয়াপাড়াস্থ জেটিঘাট দিয়ে পৌঁছান মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগের এ প্রতিনিধি দলটি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সম্ভাবনার দ্বার কি খুলতে যাচ্ছে?

এরপর বিকাল চারটা পর্যন্ত প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা রোহিঙ্গাদের সাথে প্রত্যাবাসন নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্রতিনিধি দলটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে নদী নিবাস রেস্ট হাউজ এবং গণপূর্ত বিভাগের রেস্ট হাউজে রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। আলোচনা শেষে প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমার ফিরে গেছেন।

বুধবারও রোহিঙ্গাদের সাথে আলোচনা করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি টেকনাফ আসবেন বলে জানিয়েছেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

ব্রিফিংয়ে শরণার্থী কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিনিধি দলটি দু’দলে বিভক্ত হয়ে ১৮০ জন রোহিঙ্গা পরিবারের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মূলত প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের সম্মতি আদায়ে এই আলোচনা চলছে।

“ আলোচনার জন্য আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে নিজ ভিটে-মাটি ও নাগরিকত্ব দিলেই স্বদেশে ফিরবেন তারা। “

আর দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।

শরণার্থী কমিশনার বলেন, জল ও স্থল পথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। যা ২০১৮ সালে দু’দেশের চুক্তিতে উল্লেখ্য রয়েছে। আমরা জল ও স্থল পথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আমরা আশা করি, দু’পক্ষের কথা-বার্তার মাধ্যমে তাদের মধ্যে যে আস্থার সংকট রয়েছে, সেটি দূর হবে এবং অচিরেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, যার জন্য আমরা প্রস্তুত। “

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অবশ্যই মর্যাদাপূর্ণ টেকসই এবং স্বেচ্ছায় হবে এই জন্য বাংলাদেশ সরকার সবসময় কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

এর আগে চলতি বছর দু’বার মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসে টেকনাফে। গত ১৫ মার্চ প্রথম দফায় এবং গত ২৫ মে দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময় করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি এসেছিলেন। এরই মধ্যে গত ৫ মে বাংলাদেশের ৭ সদস্য এবং রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলও মিয়ানমারের মংডুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন। উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখের বেশি আশ্রয়রত রয়েছেন। কিন্তু গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

নিউজটি শেয়ার করুন

One response to “রোহিঙ্গাদের সাথে দিনভর আলোচনা শেষে মিয়ানমার ফিরে গেলেন ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি, বুধবার আবারও আসবেন”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888